বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪১ অপরাহ্ন
প্রায় দেড়মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে কীর্তণখোলা নদীতে খননের কাজ। বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে এর সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন দেড় মাস নয় অল্প কিছুদিন ধরে বিকল রয়েছে এই মেশিন, দ্রুতই চালু করা হবে।
জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কীর্তণখোলা নদীর নাব্যতা রক্ষায় বরিশাল নদী বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়। ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় এক মাস দেরি হচ্ছে এই ড্রেজিং কাজ শেষ করতে। এর মধ্যে দেড়মাস ড্রেজিং মেশিন বিকল হয়ে পরে থাকায় কাজ শেষ করতে আরো দেরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়া বন্দরের সামনে ড্রেজিং এর পরে নাব্যতা নিয়েও নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বড় নৌ যানগুলো সমস্যার মধ্যে পরছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, নদী বন্দরের সামনে ড্রেজিং করা হলেও সেখানে ভাটার সময় ৭ থেকে ৮ ফুট পানি থাকে। আর জোয়ারের সময় থাকে ১১ ফুট পানি। যেখানে প্রয়োজন রয়েছে ১২ ফুটের অতিরিক্ত পানি। নৌ বন্দর সংলগ্ন এলাকায় পানির উচ্চতা না থাকায় ঝামেলায় পরতে হচ্ছে লঞ্চ মাস্টারদের। এদিকে ড্রেজিং মেশিন বন্ধ থাকায় এই সমস্যা কবে নাগাদ শেষ হবে নির্ধারিত ভাবে কেউই বলতে পারছে।
ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটের লঞ্চ মাস্টাররা জানান, নৌ বন্দরে যদি নাব্যতা সংকট দেখা দেয় তাহলে তো আমাদের জন্য বিপদ। ভাটার সময় তো পানির পরিমান খুবই কমে যায়। এতে বন্দর থেকে লঞ্চ পরিচালনা করতে সমস্যায় পরতে হয়।
বিআইডব্লিউটিএ’র এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ইতিমধ্যে বন্দর এলাকায় ড্রেজিং এর কাজ শেষ করা হয়েছে। তবে এখনো সেখানে নাব্যতা সংকট রয়েছে। যেখানে ১২ ফুটের বেশী পানি দরকার সেখানে ৭ ফুট পানির মধ্যে থাকতে হচ্ছে বিশালাকৃতির লঞ্চগুলোকে। ড্রেজিং বিভাগের উদাসীনতা ও দুর্নীতির বিষয় উল্লেখ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন, নদীতে টাকা ব্যয় করলে কাজ করা বা না করার বিষয়ে কোনো প্রমানই সম্ভবত থাকে না। তাছাড়া কীর্তণখোলা নদী অনেক বহমান হওয়ায় ড্রেজিং স্থলে পুনরায় পলি জমে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ড্রেজিং শেষ হতে না হতেই এই সমস্যা দেখা দিবে সেটা বোধগম্য নয়।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ড্রেজিং কিভাবে করা হচ্ছে সেটা আমার বিষয় না। তবে বন্দর এলাকায় ড্রেজিং ঠিকভাবে না হলে বড় লঞ্চগুলো চলাচলে সমস্যা হবেই। কেননা এখানে পানির গভীরতা প্রয়োজন অনেক।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী রেজাউর রশীদ জানান, দেড় মাস নয় ১৮ জানুয়ারী থেকে বিকল হয়ে রয়েছে ড্রেজিং মেশিনটি। তবে এর আগেও একবার বিকল হয়েছিলো। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে এবং নদী বন্দরের সামনে ড্রেজিং করার কাজ শেষ আমাদের। এখন মেশিন ঠিক হলে রসূলপুরের পিছনের দিক থেকে ড্রেজিং কাজ শুরু করা হবে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে যতদ্রুত সম্ভব ড্রেজিং করা হবে।
বিআইডব্লিটিএ’র নির্বাহী প্রকোশলী (যান্ত্রিক) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কীর্তণখোলা নদীতে নদী খননে ব্যবহৃত ড্রেজিং মেশিনটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এই মেশিনটির সাইড উইং গিয়ারের পিনিয়ন ভেঙে গেছিলো। ২ অথবা ৩দিনের মধ্যে মেশিনটি চালু হলে খনন কাজও শুরু হবে।
সুত্র: যুগান্তর